হযরত মোজাদ্দেদে আলফে সানী (রহঃ) - নকশ্বন্দীয়া তরীকা হাসিল
ইমামে রাব্বানী মুজাদ্দিদে আলফে সানী (রহ.)-এর মনে আগে থেকেই বায়তুল্লাহ শরীফের হজ্জ ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের রওযা পাকের যিয়ারত করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু অসুস্থ ও বৃদ্ধ পিতার খিদমতের জন্য তিনি হজ্জ আদায় করতে পারেননি।
হিজরী ১০০৭ সালে তাঁর বুজর্গ পিতার ইনতিকালের পর তিনি ঐ বছরই হজ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে দিল্লীতে উপনীত হন। এ সময় তাঁর বন্ধু ও খাজা বাকী বিল্লাহ (র.) - এর মুরীদ মাওলানা হাসান কাশ্মীরীর সাথে তার দেখা হয়। এ সময় মাওলানা সাহেব তাঁর নিকট হযরত খাজা বাকী বিল্লাহ (র.) -এর কামালাতের বিষয় প্রকাশ করে তাঁর সাথে দেখা করার জন্য তাঁকে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন-
খাজা সাহেব নকশ্বন্দীয়া তরীকার একজন অতুলনীয় রত্ন, এ রকম লোক বর্তমানে দুর্লভ। তাঁর একটি নেক-নজরে তালেবগণ এমনই ফয়েয লাভ করেন, যা দীর্ঘদিন সাধনা ও চিল্লার দ্বারা হাসিল হয় না।
ইতিপূর্বে হযরত মুজাদ্দিদ (রহ.) এই তরীকা সম্পর্কে তাঁর বুজর্গ পিতার নিকট থেকে বহু কিছু শুনে এবং বইপত্র পড়ে অবগত হয়েছিলেন, এবং এই তরীকার প্রতি তাঁর স্বাভাবিক আকর্ষণ থাকার তিনি দেরী না করে তখনই মাওলানা হাসান সাহেবের সাথে খাজা সাহেবের দরবারে হাযির হন। কার ও প্রতি কোনরূপ আগ্রহ প্রকাশ করার অভ্যাস হযরত খাজা (র.)-এর ছিলনা। তা সত্বেও তিনি তাঁর আদতের খিলাফ করে হযরত মুজাদ্দিদ (রহ.) কে কিছুদিন তাঁর খানকায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন । তিনি সেখানে এক সপ্তাহ থাকবেন বলে ওয়াদা করলেও, প্রায় আড়াই মাস হযরত খাজার দরবারে অবস্থান করেন। দু’দিনের মধ্যে তিনি নিজের মধ্যে হযরত খাজার প্রভাব উপলব্ধি করে বায়আত হওয়ার দরখাস্ত পেশ করেন। ফলে, খাজা সাহেব সাথে সাথেই তাকে বয়আত করে ‘ক্বলবে’ যিকিরের তালিম দেন এবং তাঁর ‘ক্বলব’ তখনই জারী হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র
- মুজাদ্দিদ-ই-আলফে সানী (রহঃ) জীবন ও কর্ম (লেখকঃ ডক্টর আ. ফ. ম. আবু বকর সিদ্দীক)