হযরত মোজাদ্দেদে আলফে সানী (রহঃ) - শৈশবের কয়েকটি ঘটনা
যে বৃক্ষ ভবিষ্যতে প্রকাশ্য মহীরুহে পরিণত হবে, তা যেমন ছোট থাকতেই বোঝা যায়, তেমনি যারা পরিণত বয়সে মহাপুরুষের মর্যাদা লাভ করবেন, তাঁদের মধ্যে ক্সশশব থেকেই বহু অলে․কিক ও বিস্ময়কর ব্যাপার পরিলক্ষিত হয়। সুতরাং হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফে সানী (রহ:)-এর শৈশবে ও কিছু আশ্চর্যজনক ব্যাপার লক্ষ্য করা যায়। যেমন, তিনি মাতৃগর্ভ থেকেই ‘মাখতুন’ হালতে অর্থাৎ খাতনাকৃত অবস্থায় ভূমিষ্ট হন। উল্লেখ্য যে, হযরত রাসূলে পাক (স.) ও ‘মাখতুন’ অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেন।
হযরত মুজাদ্দিদ (রহ:)-এর শৈশবকালীন আরো একটি আশ্চর্যজনক ব্যাপার এই যে, তিনি কখনো নগ্নদেহে থাকতেন না। কখনো তাঁর সতর অনাবৃ ত হলে, সাথে সাথে তা ঢেকে নিতেন। তিনি সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও হাসি মুখে থাকতেন। তাঁর প্রত্যেকটি আচার-আচরণ ও চাল-চলনের মধ্যে এক বিশেষ নিদর্শন পরিলক্ষিত হতো।
হযরত মুজাদ্দিদ (রহ:) দুদ্ধপোষ্য শিশু থাকাবস্থায় একবার ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে তার পিতা-মাতা ও পরিবারের অন্যান্য সকলে তাঁর জীবন সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েন। এ সময় হযরত শাহ কামাল কায়থিলী (রহ:) সিরহিন্দ শরীফে আসেন। এখবর পেয়ে শায়খ আব্দুল আহাদ (রহ:) তাঁর অসুস্থ শিশুকে দু’আ করার জন্য তাঁর কাছে নিয়ে যান। শিশুকে দেখা মাত্রই হযরত শাহ সাহেব বলেন
আল্লাহ তায়ালা এই শিশুর হায়াত দারাজ করুন। এর ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জল। পরিণত বয়সে সে আলেমে হাক্কানী ও আরিফে কামিল হবে এবং আমার মত হাজার হাজার লোক তাঁর আত্মিক তালিমে উপকৃত হবে। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ প্রাপ্তির যে আলো সারা দুনিয়াতে ছড়াবে, তা কিয়ামত পর্যন্ত কখনো নিস্প্রভ হবে না।
এরপর শাহ সাহেব তাঁকে কোলে নিয়ে নিজের পবিত্র জিহবা তাঁর মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দেন। শিশু মুজাদ্দিদে (রহ:) অনেকক্ষণ পর্যন্ত উক্ত জিহবা লেহন করতে থাকেন। অত:পর শাহ সাহেব তাঁর পিতাকে সান্তনা দিয়ে বলেন :
চিন্তা করবেন না, ইনশা আল্লাহ্ শিশু আরোগ্য লাভ করবে। আল্-হামদু লিল্লাহ, শিশু কাদেরিয়া তরীকার সব নিয়ামত লাভ করলো। আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা তাঁর দ্বীনের খিদমত নিবেন।
তথ্যসূত্র
- মুজাদ্দিদ-ই-আলফে সানী (রহঃ) জীবন ও কর্ম (লেখকঃ ডক্টর আ. ফ. ম. আবু বকর সিদ্দীক)