নামাজের মাকরুহ সমুহ
নিচের লেখা আমলগুলির যেকোন একটি আমল করলে নামাজ মাকরুহ হবে। অনেক ইমামের মতে, একই রোকনের মধ্যে তিনটি মাকরুহ আমল করলে নামাজ কবুল হয় না। হাদীছ অনুযায়ী এ নামাজ খুশুর নামাজ হবে না।
- মাকরুহ্ ১
ইচ্ছা পূর্বক ওয়াজিব ও ছুন্নাত তরক করা।
- মাকরুহ্ ২
নামাজের ভেতর আঙ্গুল মটকানো।
- মাকরুহ্ ৩
এক হাতের আঙ্গুল অন্যহাতের আঙ্গুলের মধ্যে রেখে পাঞ্জা ধরার ন্যায় ধরা।
- মাকরুহ্ ৪
নামাজের মধ্যে হাত দিয়ে কোমর ধরা।
- মাকরুহ্ ৫
বিনা ওজরে কুকুরের মত দু’পা সামনে রেখে চোতরের উপর বসা।
- মাকরুহ্ ৬
তাশাহুদ অথবা ছেজদার সময় দু'গোড়ালীর উপর বসে হাত দিয়ে মাটিতে ভর করে বসা।
- মাকরুহ্ ৭
পুরুষের ছেজদার সময় দু’হাত মাটিতে বিছিয়ে রাখা।
- মাকরুহ্ ৮
জামা থাকা সত্বেও খালি গায়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৯
বিনা ওজরে আসন পেতে বসা।
- মাকরুহ্ ১০
পুরুষের নামাজের মধ্যে এক হাতে মাথার চুল বাধা।
- মাকরুহ্ ১১
মাথার মাঝখান ফাঁক রেখে রোমাল বেধে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ১২
মাথার মাঝখান ফাক রেখে পাগড়ী বাধা এবং সে অবস্থায় নামাজ পড়া। (আলমগীরী)
- মাকরুহ্ ১৩
ছেজদার সময় এক হাতে সামনের বা পিছনের কাপড় টেনে ধরা।
- মাকরুহ্ ১৪
মাথা বা ঘাড়ের দু’দিকে চাদর বা রোমাল ঝুলিয়ে দেয়া।
- মাকরুহ্ ১৫
শুধু ডান কাধ বা শুধু বাম কাধের উপর কাপড় রেখে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ১৬
কেরাত শেষ না করে রুকুতে যাওয়া।
- মাকরুহ্ ১৭
প্রথম রাকাত থেকে দ্বিতীয় রাকাতে কেরাত লম্বা করা।
- মাকরুহ্ ১৮
ফরজ নামাজে এক রাকাতে একই ছুরা দু’বার পড়া।
- মাকরুহ্ ১৯
প্রথম রাকাতে যে ছুরা পড়া হয় দ্বিতীয় রাকাতে তাঁর উপরের ছুরা পড়া।
- মাকরুহ্ ২০
প্রতি রাকাতের জন্য ছুরা নির্দিষ্ট করা।
- মাকরুহ্ ২১
প্রথম রাকাতে এক ছুরা পড়ার পর এক ছুরা বাদ দিয়ে পরের ছুরা পড়া।
- মাকরুহ্ ২২
ইচ্ছা করে আতরের ঘ্রান নেয়া।
- মাকরুহ্ ২৩
কাপড় বা পাখা দিয়ে বাতাস করা।
- মাকরুহ্ ২৪
রুকুতে হাটুর উপর হাত না রাখা।
- মাকরুহ্ ২৫
তাশাহুদের সময় ও দু'ছেজদার মধ্যে হাতের তালু হাটুর উপর রাখা।
- মাকরুহ্ ২৬
কিয়ামের সময় বাম হাতের উপর ডান হাত না রাখা।
- মাকরুহ্ ২৭
হাই তোলা।
- মাকরুহ্ ২৮
বিনা কারণে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া। চোখ বন্ধ রাখলে যদি একাগ্রতা বেশী হয় তাহলে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়বে।
- মাকরুহ্ ২৯
উপরের দিকে দৃষ্টি দেয়া।
- মাকরুহ্ ৩০
যে কোন রোকন নিয়ম অপেক্ষা বেশী বিলম্ব করা।
- মাকরুহ্ ৩১
কামড়ানোর আশংকা না থাকলে সাপ, বিচ্ছু, বোলতা, পিপড়া ইত্যাদী মারা। আশংকা থাকলে মারা মাকরুহ নয়।
- মাকরুহ্ ৩২
কাপড় দিয়ে নাক মুখ বন্ধ করে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৩৩
মুখের মধ্যে কোন জিনিষ রেখে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৩৪
বিনা ওজরে শুধু কপাল দিয়ে ছেজদা করা।
- মাকরুহ্ ৩৫
হাতের তালু সোজা রাখলে যে পরিমান পানি ধরে সে পরিমান নাপাকী নিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৩৬
পরিষ্কার কাপড় থাকা অবস্থায় ময়লা কাপড় পরে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৩৭
খালি মাথায় নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৩৮
নামাজের মধ্যে জোরে কান্না কাটি করা।
- মাকরুহ্ ৩৯
ক্ষুধার সময় খাওয়া বাদ দিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৪০
আঙ্গুলের কর দিয়ে নামাজের মধ্যের আয়াত বা তছবীহ পড়ার হিসাব করা।
- মাকরুহ্ ৪১
জীব জানোয়ারের ছবির উপর ছেজদা করা।
- মাকরুহ্ ৪২
নামাজ পড়ার জায়গায় বা তার ডানে বামে সামনে জীব জানোয়ারের ছবি থাকলে সেখানে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৪৩
আগুন সামনে রেখে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৪৪
ঘুমান লোক সামনে রেখে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৪৫
কপালে ধুলা বালি লাগলে নামাজের মধ্যে তা মুছে ফেলা।
- মাকরুহ্ ৪৬
উপযুক্ত ইমাম থাকতে অনুপুযুক্ত ইমামের পিছনে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৪৭
মুছুল্লিদের কষ্ট অবস্থায় ইমামের লম্বা ছুরা কেরাত পড়া।
- মাকরুহ্ ৪৮
একাগ্রতা নষ্ট হয় এমন জিনিষ সামনে রেখে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৪৯
নামাজের সামনে লোক চলাচল করার অবস্থা থাকলে ছুতরা না দিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৫০
কাউকে সামনে রেখে তার মুখোমুখি ফিরে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৫১
মছজিদের মধ্যে কোন এক জায়গা নির্দিষ্ট করে সেখানে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৫২
জামাত শুরু হলে কাতারের মধ্যে দাড়িয়ে ব্যক্তিগত ফরজ নফল বা অন্য কোন নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৫৩
ছেজদার সময় হাত পায়ের আঙ্গুলগুলি কিবলার দিকে না রেখে অন্যদিকে রাখা।
- মাকরুহ্ ৫৪
নিয়ত বাধার সময় হাত কানের লতি পর্যন্ত না উঠিয়ে ঘাড়ের নিচে বা কানের উপরে উঠান।
- মাকরুহ্ ৫৫
ছেজদার সময় ইচ্ছা করে কাপড় দিয়ে পা ঢাকা অথবা কাপড় খুলে ফেলা।
- মাকরুহ্ ৫৬
কিয়ামের মধ্যে ছেজদার যায়গা ছাড়া অন্য দিকে তাকান।
- মাকরুহ্ ৫৭
কথাবার্তা বলছে এমন লোককে সামনে নিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৫৮
বিনা ওজরে রুকুর সময় হাটুর উপর হাত না রেখে জানুর উপর হাত রাখা।
- মাকরুহ্ ৫৯
ছেজদার সময় মাটিতে হাত না রাখা অথবা ছেজদার সময় এক পা উচু করা।
- মাকরুহ্ ৬০
ওজর থাকা সত্বেও জোরে কাশি দিলে বা গলা খাকরালে। বিনা ওজরে কাশলে বা গলা খাকরালে নামাজ ফাছেদ হবে।
- মাকরুহ্ ৬১
বিনা ওজরে ছেজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে প্রথমে হাটু না রেখে হাত রাখলে অথবা ছেজদাহতে উঠার প্রথমে হাত না উঠিয়ে হাটু উঠালে।
- মাকরুহ্ ৬২
রুকুর সময় মাথা পিঠ বরাবর সোজা না রেখে বেশী উচু করা বা বেশী নীচু করা।
- মাকরুহ্ ৬৩
রুকুতে যাওয়ার পরে বা ছেজদায় যাওয়ার পরে তাকবীর বলা।
- মাকরুহ্ ৬৪
আমিন ও বিছমিল্লাহ জোরে বলা।
- মাকরুহ্ ৬৫
কোন লোককে নামাজে আসতে দেখে তার জন্যে ইমামের কেরাত বা রুকু লম্বা করা।
- মাকরুহ্ ৬৬
ইমামের পিছনে মোকতাদির কেরাত পড়া।
- মাকরুহ্ ৬৭
দু’কানে হাত উঠাবার সময় মাথা নিচু করা বা পিছনের দিকে ঘাড় বাকা করা অথবা দু’কাধের উপর হাত না উঠিয়ে তাকবীর বলা।
- মাকরুহ্ ৬৮
ছেজদার সময় বগলের সাথে হাত মিশিয়ে দেয়া।
- মাকরুহ্ ৬৯
ইমাম হাজির না থাকাবস্থায় ইকামাত বলে তার জন্যে দাড়িয়ে দেরী করা।
- মাকরুহ্ ৭০
কাতারের পিছনে থেকে আল্লাহু আকবার বলে কাতারে ঢুকে পড়া।
- মাকরুহ্ ৭১
বিনা ওজরে রুকু ছেজদার মধ্যে পিঠ সোজা না রাখা।
- মাকরুহ্ ৭২
দাড়ান ও বসা অবস্থায় পিঠ সোজা না রাখা।
- মাকরুহ্ ৭৩
জুমা, জোহর, আছরের নামাজে ইমামের ছেজদার আয়াত পড়া।
- মাকরুহ্ ৭৪
বিনা ওজরে দেয়ালে বা অন্য কিছুর সঙ্গে টেক/হেলান দিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৭৫
বিনা ওজরে শরীর চুলকান বা শরীরের কাপড় ছেড়ে দেয়া।
- মাকরুহ্ ৭৬
রুকু ছেজদার মধ্যে অথবা তাশাহুদ পড়ার মধ্যে কেরাত পড়া।
- মাকরুহ্ ৭৭
ত্রিশুলের দিকে ফিরে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৭৮
ছেজদার জায়গা হতে পাথর বা ঢেলা সরান।
- মাকরুহ্ ৭৯
দু’হাতের জামার হাতা গুটিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৮০
কাতারে ফাঁক থাকা অবস্থায় পিছনে দাড়ান। কাতারে ফাক না থাকলে জোর করে কাউকে সরিয়ে দিলে।
- মাকরুহ্ ৮১
ইমাম একা একা উচু জায়গায় দাড়ালে।
- মাকরুহ্ ৮২
নামাজের মধ্যে কপালের ধুলা বা ঘাম মুছে ফেলা।
- মাকরুহ্ ৮৩
নামাজের মধ্যে থেকে থুথু ফেলা।
- মাকরুহ্ ৮৪
ইমামের জোহর, মাগরিব, এশার যে কোন ফরজ নামাজ বাদে সেখান থেকে সরে না যেয়ে অন্য নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৮৫
ফজর ও আছর নামাজের ছালাম ফিরানোর পর ইমামের মোকতাদীর দিকে ফিরে না বসা।
- মাকরুহ্ ৮৬
পেশাব পায়খানার বেগ নিয়ে নামাজ পড়া।
- মাকরুহ্ ৮৭
নামাজের মধ্যে ছালাম ব্যতীত দু’দিকে মুখ ফিরান।
- মাকরুহ্ ৮৮
রাস্তার উপর, গোছলের জায়গায়, পেশাব পায়খানার জায়গায়, নাপাক জিনিষের নিকটে ও কবর স্থানে নামাজ পড়া।
তথ্যসূত্র
- নামাজ প্রশিক্ষণ (লেখকঃ মাহবুবুর রহমান)