হযরত মোজাদ্দেদে আলফে সানী (রহঃ) - মুজাদ্দিদ উপাধি লাভ
হযরত শায়খ আহমদ সিরহিন্দী (রহ.) তাঁর মুর্শিদের নির্দেশে সিরহিন্দ শরীফে ফিরে আসলে দলে দলে লোক তাঁর খিদমতে হাযির হয়ে বায়আত হতে থাকে। এসময় একদিন তিনি ফজরের নামাযের পর তাঁর হুজরায় মুরাকাবায় মশগুল থাকা অবস্থায় দেখেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম রুহানীভাবে সমস্ত আম্বিয়া, অসংখ্য ফিরিশ্তা, আউলিয়া ও গাওস কুতুবদের সাথে সেখানে তাশরীফ এনেছেন। নবী করীম (স.) তাঁর পবিত্র হাতে শায়খ আহমদ (রহ.)কে একটি অমূল্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ পোশাক পরিয়ে দিয়ে বলেনঃ
শায়খ আহমাদ মুজাদ্দিদের প্রতীকস্বরূপ আমি তোমাকে এই ‘খিলআত’ বা পোশাক পরিয়ে দিলাম এবং দ্বিতীয় হাজার বছরের জন্য আমি তোমাকে আমার বিশেষ প্রতিনিধি মনোনীত করলাম। আমার উম্মাতের দ্বীন ও দুনিয়ার যাবতীয় দায়িত্ব আজ হতে তোমার উপর অর্পিত হলো।
উল্লেখ্য যে, এই ঘটনাটি ১০১০ হিজরীর ১০ই রবিউল আউয়াল শুক্রবার ফযরের নামাযের সময় সংঘটিত হয়। নবী রাসূলগণ সাধারণতঃ যে বয়সে নবূওতের দায়িত্ব প্রাপ্ত হতেন, সেই বয়সে অর্থাৎ চল্লিশ বছর বয়সের সময় হযরত শায়খ আহমদ সিরহিন্দি (রহ.) “মুজাদ্দিদে আল্ফে সানী” উপাধিতে ভূ ষিত হন। এ ঘটনার দ্বারা বু ঝা যায় যে, আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর উপর নবী-রাসূলস্বরূপ দায়িত্বের বোঝা অর্পন করেছিলেন। মুজাদ্দিদে আলফে সানী (রহ.) এ সম্পর্কে বলেনঃ
আমার উপর মুজাদ্দেদীয়াত বা সংস্কারকের দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে, শুধু পীরি-মুরিদি করার জন্য আমাকে প্রেরণ করা হয় নি । মুরীদদের মারিফাতের বা আল্লাহ্ প্রাপ্তির তালিম দেয়া আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। যে মহান দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছে, তা অনেক ব্যাপক ও বড়। মুরীদদের তরীকতের তালিম বা শিক্ষা দেয়া এবং মানুষকে কামালিয়াত বা পূর্ণতার স্তরে পৌঁছানো রাস্তা থেকে কুড়ানো তুচ্ছ জিনিসের মত।
— শায়খ আহমদ সিরহিন্দী (রহ.), মাকতূবাতে ইমামে রাব্বানী, ২য় খন্ড, মাকতূব নং- ৬ দ্রষ্টব্য
তথ্যসূত্র
- মুজাদ্দিদ-ই-আলফে সানী (রহঃ) জীবন ও কর্ম (লেখকঃ ডক্টর আ. ফ. ম. আবু বকর সিদ্দীক)